• নরসিংদী
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ০২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

শিক্ষকরা মানুষ গড়ার এবং সমাজ বিনির্মাণের কারিগর : জেলা প্রশাসক 


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৩৪ এএম
শিক্ষকরা মানুষ গড়ার এবং সমাজ বিনির্মাণের কারিগর : জেলা প্রশাসক 

হলধর দাস: মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবার (মাশিপ),নরসিংদী'র নবগঠিত কমিটির অভিষেক এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান- ২০২৩ গত ৩০ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দী গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, নরসিংদী মসজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ মোবারুল ইসলাম ও নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম ভূঞা।

সংগঠনের মোঃ আলতাফ হোসেন নাজির এর সভাপতিত্বে এবং সাঃ সম্পাদক মোঃ আরিফুর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফজাল হোসেন কাজল, নূর হোসেন ভূঞা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, যারা শ্রম ও মেধাবী দিয়ে,নিজেদের জায়গা জমি দিয়ে,নিজেদের টাকা-পয়সা খরচ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে গেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে গেছেন বলেই আজকে আপনাদের ছেলে-মেয়েরা সে সমস্ত স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে বিভিন্ন উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং আপনারা অনেকেই সেই সকল শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। আপনারা জনাব আবদুল কাদির মোল্লা সহ অনেকে বক্তব্য রেখেছেন। আমি জানতে পেরেছি অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এখানে অংশগ্রহণ করেছেন। নরসিংদীর শিক্ষার মান অত্যন্ত ভালো।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এটি শিক্ষা নগরী হিসেবে আশেপাশের জেলা তথা সমগ্র বাংলাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। আমি বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই জনাব আবদুল কাদির মোল্লাকে। ওনার প্রতিষ্ঠিত আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ সারা বাংলাদেশে ভালো ফলাফল তৈরি করেছে বলে । শুধু এ বছর নয় ইতিপূর্বেও এটা অনেকবার ভালো ফলাফল তৈরি করেছে। এ প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভালো ফলাফল তৈরি করে আজকে নরসিংদীকে সারা বাংলাদেশে পরিচিত লাভ করেছেন। এ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই।

আমি দুঃখের সাথে বলতে চাই যে, নরসিংদীতে জনাব আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ সহ সারা বাংলাদেশ এমন অনেক প্রতিষ্ঠান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ভালো ফলাফল তৈরি করেছে, ঠিক তেমনি ইন্টারমিডিয়েটে পাশ করেনি এরকম কলেজও নরসিংদী জেলায় এবছর দেখতে পেরেছি। তার মানে দেখা যায় নরসিংদী শহর এবং নরসিংদীর গ্রাম দুটি জায়গায় শিক্ষার গুণগত মানের ক্ষেত্রে ভালো রকমের ফারাক রয়েছে। অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ভালো মানের শিক্ষা প্রদান করে থাকেন আবার দেখেছি, জানতে পেরেছি অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান ভালো নয়।

তাই আমরা জেলা প্রশাসক, নরসিংদী'র উদ্যোগ এবছর প্রথমবারের মতো "জেলা প্রশাসক বৃত্তি" নামে অষ্টম শ্রেণির একটি বৃত্তি পরীক্ষা চালু করেছি। তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো একটি প্রতিষ্ঠান এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা। শিক্ষকদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা। ওমুক প্রতিষ্ঠান যদি পারে, তাহলে আমি বা আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমরা কেন পারব না? এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যারা প্রচুর মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের মূল্যায়ন করা।

আমরা তাদেরকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করতে চাই। নরসিংদী সন্তানদের অনেক উদ্ভাবন রয়েছে যা আপনারা শুনলে খুশি হবেন। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি রোবোটিক ক্লাব রয়েছে। তারা বেশ বড় একটি ড্রোন তৈরি করেছে যাহা গত ১৬ ডিসেম্বর নরসিংদী স্টেডিয়ামে উড্ডয়নের কথা ছিল। সামান্য ত্রুটির কারণে তা হয়নি। ৪ মিটার দৈর্ঘ্য জাতীয় পতাকা নিয়ে ড্রোনটি নরসিংদী শহরের চার কিলোমিটার জায়গা প্রদক্ষিণ করার কথা ছিল। আশা করছি, আগামী ২৬শে মার্চ নরসিংদী শহরের আকাশে ৪ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে এটা আমরা উড়াবো।

এ সমস্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে যদি আমরা দাঁড়াই,আব্দুল কাদির মোল্লা সাহেবের মত ব্যক্তিরা দাঁড়ান, তাহলে যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো পিছিয়ে আছেন শিক্ষার গুণগত মানে, সে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সামনের দিকে আসবে।
শিক্ষকদের এত বড় সমাবেশে আমি আর কখনো যাইনি। শিক্ষক মানে মানুষ গড়ার কারিগর, আগামী সমাজ বিনির্মাণের কারিগর।

জানলাম অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আব্দুল কাদির মোল্লা সাহেব টাকা দিয়েছেন। আবার সে টাকা কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা তুলে খেয়েও ফেলেছেন। সত্য মিথ্যা জানি না। আমার নলেজে যদি আসে আমি কিন্তু সেই সকল প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি, প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেবো না।
শুধু কাদির মোল্লা সাহেব বলে কথা নয়, সরকারি-বেসরকারি যে প্রতিষ্টানই টাকা দিবেন এবং যে কন্ডিশনে দিবেন সেই মোতাবেই টাকা খরচ করতে হবে। এটা নীতি-নৈতিকতার বিষয়। আপনি যদি সে টাকা তুলে অন্য খাতে খরচ করে থাকেন, তাহলে সে টাকা আবার যথাস্থানে জমা করে রাখুন। তিনি যদি আমাকে বলেন বা কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে কিন্তু বিপদে পরবেন। সেই বিপদে পড়ার আগেই আপনাদেরকে আবারও সতর্ক করে দিতে চাই, টাকাটা যদি অন্য খাতে খরচ করে থাকেন তাহলে ফেরত নিয়ে আসেন।

আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, আমি আপনাদের এখানে আসছি একটা অভিযান নিয়ে। শিক্ষার সাথে আমি অশিক্ষিত মানুষটি দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছি। এখানে আমার কোন লাভ নেই। আমার লোকসান নেই। চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার লাভ লোকসান হলো,আমার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান শিল্প কলকারখানায়। আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ আমার সিটি কলেজের ছাত্রটি আজ "ডেপুটি কমিশনার অফ টেক্স "পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে। এটাই আমার পাওয়া।
তিনি আরে বলেন, মন্ত্রী এমপি হওয়ার শখ আমার নেই। আমি মানবতার কল্যাণে কাজ করি।আমার অনেক কাজের সাক্ষী আপনারা।আপনারা সব সময় আমার কাছে আসেন, এজন্য আপনাদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। চেয়ারম্যান মেম্বারদের প্রতি আমার কোন বিশ্বাস নাই।

আপনাদের মাধ্যমে আমি সমাজের কল্যাণে কাজ করি। করুনাকালে আপনাদের মাধ্যমেই আমি দেড়লক্ষ পরিবারের মাঝে সাহায্য অনুদান দিতে পেরেছি।

নরসিংদী প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন,ফ্রান্সের প্যারিসে শিক্ষকদের ওপর বিশেষ আন্ত:সরকার একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সম্মেলনে শিক্ষকদের মর্যাদা সম্পর্কে ইউনেস্কো সুপারিশমালা গ্রহণ করে। এটা শিক্ষকদের চলার পথে একটি দলিল। শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব, কর্মসংস্থান এবং তাদের মানগুলোর বর্ণনা ওই দলিলে উপস্থাপিত হয়। ১৯৬৬ সালের পর ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদ্বোধন করা হয়। এই বিশ্ব শিক্ষক দিবস বিশ্বব্যাপী একটি ইভেন্টে পরিণত হয়। এতে শিক্ষকদের প্রধানত: সম্মানিত করা হয়। সেই থেকে ভবিষ্যৎ গঠনে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে মুখোমুখি করা এবং আপনাদের চ্যালেঞ্জগুলোকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে, তাদের ভবিষ্যৎ গঠনে আপনাদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আপনাদের অবদানে মানবিক উৎকর্ষতার মাধ্যমে সমাজ আরো উন্নত হউক আমি এই প্রত্যাশা করি।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ২৫৫ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
 

 

শিক্ষা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ