স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে বশিরুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্য ও সুলতান মিয়া নামে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এলাকাবাসীর পক্ষে সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর এলাকার উল্লেখিত ব্যক্তিরা মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে বলে অভিযোগে বলা হয়।
অভিযুক্তরা বশিরুল ইসলাম চাঁনপুর ইউপির ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সুলতান মিয়া ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ।
অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত প্রভাবশালী চক্র মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার সাধারণ মানুষের ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, কবরস্থান, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা গত কয়েক বছরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানেও নদী ভাঙ্গনের ফলে ফসলি জমিসহ ভিটেমাটি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতীরে ভাঙন অব্যাহত আছে।
ইতোমধ্যে একাধিকবার অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার ও শ্যালো মেশিন জব্দ করলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। এর মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মিয়া (৪৫) এর ড্রেজার জব্দ করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার ঘটনাও ঘটেছে।
অভিযোগকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, "অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নদীতীরবর্তী ফসলি কৃষি জমি, ভিটে মাঠি কেটে নিচ্ছে। তাদের এই বালু উত্তোলনে বাধাঁ দিতে এলে মামলা-হামলা, মারধর সহ হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। তারা এতোটাই শক্তিশালি যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও সাহস করেনা। বাধ্য হয়েই এলাকাবাসীর পক্ষে থানায় অভিযোগ করেছি।"
চাঁনপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম নামে অপর বালু খেকো 'নদী পাড়ে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ক্রমাগত ভাঙ্গছে নদীর পাড়। স্থানীয়রা পড়েছে ভোগান্তিতে। যারা বালু তুলছেন তারা খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করছেন না। কথা বললেই বিপদ।'
চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানান, 'প্রভাবশালীরা বালু তুলছেন। কোনো অবস্থাতেই এটা বন্ধ হচ্ছেনা। আগে বালু তোলায় বাঁধা দিতে গিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকাবাসীর অনেকে আহত হয়েছে। প্রতিবাদ করলেই উল্টো মামলা দেয়। প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। গত উপজেলা সমন্বয় সভায় স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। স্থায়ী ভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ চাই।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বশিরুল ইসলাম সাথে যোগাযোগের তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অপর অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মিয়া বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুক্তার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। আজকে অভিযোগে কপিটি হাতে পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, চাঁনপুরের মেঘনা নদী এলাকায় বালু উত্তোলন বিষয়টি আমরা অবগত। ওই এলাকায় একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। থানায় অভিযোগের বিষয়টিও আমরা অবগত। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'