• নরসিংদী
  • শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৩ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ০৩ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

রায়পুরায় ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৫৮ পিএম
রায়পুরায় ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

রায়পুরা প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় 'খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস)র কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের মাধ‍্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। রবিবার (১ অক্টোবর) বিকেলে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীদের কয়েকজন। 

অভিযোগে জানা যায়, ওএমএস'র খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল ৩০ কেজির মুখ সেলাই করা বস্তা দেওয়ার কথা থাকলেও আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের ওই ডিলার বস্তা খুলে হতদরিদ্র মানুষদের পরিমাণের চেয়ে কম দেয়।  তাছাড়া ৫০ জনের অধিক কার্ডধারীর মাঝে চাল বিতরন না করে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ অঞ্চলের ওএমএস ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধার বিরুদ্ধে। 

ইতোপূর্বে ওএমএস'র কার্ডধারীদের মাঝে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এই দুই মাসের জন‍্য ৩০ কেজির করে দুই বস্তা চাল এক সাথে অগ্রিম দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা অধিকাংশ উপকার ভুগিদেরকে ৩০ কেজি করে ৬০ কেজির মধ‍্যে বস্তা খুলে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। এছাড়াও চাল দেওয়ার সময় অনেকের কাছ থেকে সুকৌশলে কাগজে স্বাক্ষর টিপসই রেখে পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাতে তাদেরকে আর চাল দেওয়া হয়নি।

রমজান আলীর স্ত্রী, সুহেল রানা, বাবুল মোল্লাসহ অনেকের অভিযোগ করে বলেন, ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা অধিকাংশ উপকারভোগীকে এখনও পর্যন্ত চাল দেয়নি।

চাল বিতরনের এক মাস অতিবাহিত হলেও প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক এখনো চাল পাননি। ভুক্তভোগীরা ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধার কাছে চাল চাইলে গেলে সদুত্তর না দিয়ে পরে দেখা করতে বলেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক'র কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,  আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে ৬০৯ জন উপকারভোগীর মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে ওএমএস'র চাল বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয় মাসুদুর রহমান মৃধা নামে এক ডিলারকে। চাল বিতরণের পর অনেক উপকারভোগিরা চাল না পেয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক'র কার্যালয় এসে  
উপকারভোগি চাল না পেয় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক'র কার্যালয়ে এসে মৌখিক অভিযোগ করে। অভিযোগের পর ৩০ কেজির বস্তাকে ৫০ কেজির বলে সেই বস্তা ভেঙে চাল বিতরণ করেন। এতে জন প্রতি ১০ থেকে ১৫ কেজি করে কম দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীরা  বাড়িতে গিয়ে চাল  মাপার দেখতে পায় ৬০ কেজিরস্থলে তাদেরকে দেওয়া হয়েছে ৪৫ -৪৮ কেজি।' 

ভুক্তভোগী সেতারা বেগম বলেন, চাল বিতরণের সময় গেলে টিপসই রেখে পরবর্তীতে কার্ড নম্বর ৬৭১ ভূয়া বলে চাল না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আনোয়ার ইউসুফ নামে এক ভুক্তভোগী জানান, আমার মত অনেকে চাল পাইননি। কয়েকবার ডিলাব সাথে যোগাযোগ করেও দেই দিচ্ছি বলে সময় পার করছে। 

চাল বিতরনের এক মাস অতিবাহিত হলেও প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক এখনো চাল পাননি। ভুক্তভোগীরা ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধার কাছে চাল চাইলে গেলে সদুত্তর না দিয়ে পরে দেখা করতে বলে।'

চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি জানতে তদারকি কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে মোবাইলে বেশ কয়েক দফায় ফোন করা  হলেও নাম্বারটি  বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা র মোবাইলে ফোন করলে ' অনিয়মের কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও, পরে তা  স্বীকার করে বলেন, ২০ জনের মত কার্ডহোল্ডারকে ১০ কেজি করে চাল কম দেয়া হয়েছে। আর সেই চাল অলিখিত ভাবে জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের মানুষকে দিতে হয়েছে। আর মাত্র ৭ থেকে ৮ জন কার্ডহোল্ডার এখনও চাল পায়নি, তবে তাদের দেয়া হবে।'

ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের অপর ওএমএস ডিলার এমদাদুল হক মিঠুর মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন গত কয়েক মাস ধরে চাল বিতরণ বন্ধ রয়েছে। পরে সেপ্টেম্বর অক্টোবর দুই মাসে চাল অগ্রিম দেওয়ার সরকারের যে ঘোষণার দিয়ে তার কথা বললে তিনি বলেন, সে চাল তো আগস্ট মাসেই বিতরণ করা হয়েছে।  সেই চাল বিতরণের অনিয়মের কথা জানতেই আপনাকে ফোন দিয়েছি এমনটা বললে তিনি অনেক লোকজন আছে তাই কথা ভালোভাবে বুঝা যাচ্ছে না এব‍্যাপার পরে কথা বলবেন বলে সংযুক্তি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ ব্যাপারে আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল করিম ফারুক'র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অবগত নন। এ ব্যাপারে কোন ভুক্তভোগী তার কাছে অভিযোগ করেননি বলে জানান।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল উদ্দিন বলেন, 'ভুক্তভোগীরা যাতে চাল পায় ডিলারের সাথে কথা বলি আগেই সেই ব্যবস্থা করবো।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আজগর হোসেন বলেন, 'আমি অসুস্থ থাকায় বাসায় আছি। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

অর্থনীতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ