নুরুল ইসলাম নূরচান : নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা ও মনোহরদী উপজেলায় অবস্থিত ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৪৮ কিলোমিটার। সড়কটি ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা হয়ে ইটাখোলা থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়কটির ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে নরসিংদী সড়ক (সওজ) বিভাগের আওতাধীন ৩২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কাজ চলছে।
এর মধ্যে শিবপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এবং কলেজ গেইট এলাকায় দুটি আন্ডারপাসের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে শুরু করা হয়। দেড় বছর যাবত ধীরগতিতে কাজ চললেও ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করার পর রহস্যজনক কারণে গত প্রায় ছয় মাস যাবত দুটি আন্ডারপাসের কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে শিবপুর এবং কলেজ গেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিদিনই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পায়ে হেঁটে চলা মানুষের দুর্ভোগ আরো চরম আকার ধারণ করে।
শিবপুর উপজেলা পরিষদ এবং বাজারের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে প্রতিদিন চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন শত শত মানুষ । কারণ, কলেজ গেইট এলাকায় যেখানে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে নিরাপত্তার কারণে ঢেউটিন দিয়ে বেড়া দেওয়া। এছাড়া সড়কের দক্ষিণ দিকে আধা কিলো এবং উত্তর দিকে আধা কিলো মিটার রাস্তা পর্যন্ত দুই সাইডে ব্লক দেয়াল উঠানো। ফলে পশ্চিম ও পূর্ব অঞ্চলের মানুষ বাইসাইকেল কিংবা রিক্সা নিয়ে রাস্তা পারাপারের জন্য দক্ষিণ দিকে অথবা উত্তর দিকে আধা কি.মি ঘুরে তারপর রাস্তা পারাপার হতে হয়। শিবপুর পৌর বাজারে সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার দুটি হাট বসে। এই হাটে বিক্রির জন্য পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আসাটাও অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কটির পশ্চিম পাশে শিবপুর উপজেলা শহর লাগুয়া দুটি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, একটি সরকারি কলেজ এবং ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। পূর্ব পাশে রয়েছে একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয়, আছে পাইভেট দুটি হাসপাতাল। এসব বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী, হাসপাতালে রোগী ও রোগীর স্বজনরা যাতায়াত করতে পারছেন না আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে রাস্তা খোলা না থাকার কারণে।
কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীরা জানান , 'যদি আন্ডারপাসের নিচে দিয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের রাস্তাটি খুলে দেয়া হয় তাহলে এই জনদুর্ভোগ লাগব হয়ে যাবে।' কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই কাজটি কেন করছেন না- তা কারোরই বোধগমও নয়।
শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, 'আঞ্চলিক মহাসড়কটির পশ্চিম পাশ থেকে প্রায় দু'শ ছাত্রছাত্র আমার বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে রাস্তা খোলা না থাকার কারণে অনেক ছাত্রছাত্রী দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না।' অনতিবিলম্বে রাস্তাটি খুলে দেওয়ার জন্য তিনি দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে শিবপুর সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজীব কুমার দাস বলেন, 'আন্ডারপাসের কাজ বন্ধ না, অর্থাভাবে কাজ ধীরগতিতে চলছে। অর্থ ছাড় পেলেই দ্রুত গতিতে কাজ সম্পন্ন করা হবে।' নভেম্বরের মধ্যেই আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে রাস্তা খুলে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।