• নরসিংদী
  • মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

শিবপুরে ডোবায় মিলল দুটি বিদেশি সাকার মাছ


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:২২ পিএম
শিবপুরে ডোবায় মিলল দুটি বিদেশি সাকার মাছ

স্টাফ রিপোর্ট: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের সৈয়দেরগাঁও গ্রামের ডা. বাসিরউদ্দিনের বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে পাওয়া গেলো দুটি বিষাক্ত সাকার ফিস। সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ডোবা সেচে টাকি, কৈসহ দেশি প্রজাতির মাছ ধরতে গিয়ে এ দুটি সাকার ফিস (মাছ) পাওয়া যায়। একটি মাছের ডিম হয়েছে। এ দুটি মাছ দেখতে এলাকার কয়েক শ' মানুষ ভিড় জমায়।

উপস্থিত সকলে মাছ দুটি দেখে অবাক হয়ে যায়। তারা বলেন, এই মাছ তো সমুদ্রে থাকে, কিন্তু এখানে এলো কী করে! ডা. বাসিরউদ্দিন জানান, তার ভাইসহ অন্যরা সকালে ডোবার পানি সেচে মাছ ধরছিল। এসময় সাকার ফিস দুটি তারা দেখতে পায়। পরে মাছ দুটি ডোবার পাড়ে নিয়ে আসেন। এ খবর পেয়ে বহু মানুষের সমাগম হয়।

সাকার মাছের পিঠের ওপরে বড় ও ধারালো পাখনা আছে। দুই পাশেও রয়েছে একই রকমের দুটি পাখনা। এর দাঁতও বেশ ধারালো।

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাকার ফিসের আসল নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকাসটোমাস। আশির দশকে অ্যাকোয়ারিয়ামের শেওলা ও ময়লা পরিষ্কার করতে এই মাছ বিদেশ থেকে আনা হয়। এই মাছ দক্ষিণ আমেরিকায় ব্যাপকভাবে দেখা যায়। তবে কয়েক বছর ধরে তা ভারত, চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জলাশয়ে দেখা যাচ্ছে। সাকার মাছের পিঠের ওপরে বড় ও ধারালো পাখনা আছে। দুই পাশেও রয়েছে একই রকমের দুটি পাখনা। এর দাঁতও বেশ ধারালো। সাধারণত জলাশয়ের আগাছা, জলজ পোকামাকড় ও ছোট মাছ এদের প্রধান খাবার। 

যেসব পানিতে দূষণের কারণে অক্সিজেনের পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে, সেখানে অন্য মাছ বাঁচতে পারে না, তবে এই মাছ জীবন ধারণ করতে পারে। পানি ছাড়াও মাছটি ২৪ ঘণ্টা দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। 

সাকার মাছ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বা খারাপ পানিতে এবং কম অক্সিজেনেও বাঁচতে পারে। পাশাপাশি এটি দ্রুত প্রজনন ঘটায়। মাছটি বিষাক্ত বিধায় খাদ্যাভ্যাসে মাছের তালিকায় না থাকায় দিন দিন প্রজনন বেড়েই চলছে। এই মাছ যদি দেশের মানুষ খেত, তাহলে এত বাড়ত না। এভাবে যদি বাড়তে থাকে তাহলে অন্যান্য মাছের সঙ্গে সাকার মাছের জায়গা নিয়ে, খাবার নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এ জন্য সাকার মাছ কমাতে হবে।

মৎস্যবিদরা বলেন, ‘সাকার মাছ এখন জীব-বৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। সাকার অন্যান্য মাছের লার্ভা ও ডিম খেয়ে ফেলে। এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দেশীয় মাছ টিকে থাকতে পারছে না। সাকার মাছ ধীরে ধীরে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে তারা আরো বলেন, ‘যারা অ্যাকোয়ারিয়ামের ব্যবসা করেন, তাঁরাই বিদেশ থেকে দেশে সাকার মাছ আনেন। অ্যাকোয়ারিয়ামের কাচের সঙ্গে লেগে থাকা ময়লা সাকার মাছ খেয়ে ফেলে। এতে কাচ পরিষ্কার থাকে। এ কারণেই তাঁরা এ মাছ আনেন। কিন্তু এটা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রকৃতিতে চলে গেছে।’

মৎস্যবিদরা আরো বলেন, ‘সারা দেশ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিন-চার জায়গার নমুনা নাকি সারা দেশেই সাকার মাছের মধ্যে ভারী পদার্থ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি গবেষণায় দেখা যায়, অন্যান্য জায়গার সাকার মাছে ভারী পদার্থ নেই, তাহলে এই মাছ মানুষের খেতে সমস্যা থাকবে না।’ অপরদিকে ভারী পদার্থ না থাকলে সাকার মাছ দিয়ে মাছ ও হাঁস-মুরগির খাদ্য তৈরি করা যেতে পারে। তবে যেহেতু এটা বাড়ছে বেশি, সে জন্য যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরে মেরে ফেলতে হবে।’

 

 

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ