
স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে স্বাক্ষর জাল করে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসের কার্য সহকারী আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে সরকারি প্রকল্পের আত্মসাতকৃত ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় পিয়ন আশিককে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (১লা জুলাই) দুপুরে তাদের গ্রেফতার ও টাকা জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. ফারজানা ইয়াছমিন।
এর আগে গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও ব্যাংক ম্যানেজারের দেওয়া সিসি টিভি ফুটেজের ভিত্তিতে সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নেতৃত্বে কার্য সহকারী আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে নগদ ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন (পিআইও) অফিস ও এনএসআই সূত্রে জানা যায়, গ্রামীন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প টিআর /কাবিখা’র প্রকল্প থেকে ভূয়া বিল ভাওচার ও পিআইও’র স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয় ওই অফিসের কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিন এব্ং তার সহকারী অফিস পিওন আশিক। এরই মধ্যে গত ১৫ জুন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিআর/ কাবিখা প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেয়। কিন্তু বাজেট না থাকায় ৮১ টি বিল (বাউন্স হয়) ফেরৎ আসে। বিষয়টি নিয়ে ইউেনও কার্যালয় জুড়ে হৈচৈই পড়ে যায়। পরে গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নিয়ে গোপন অনুসন্ধান শুরু করেন। ওই সময় ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পিআইও অফিসের ২ জন কর্মচারী সংশ্লিষ্টতার প্রমান পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাত ৩টার দিকে পিআইও অফিসের কার্য সহকারী তুহিনের বাড়ীতে অভিযান চালিযে তার আলমিরাতে থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয। এসময় ওই টাকার উৎসেন সঠিক তথ্য দিতে ব্যরাথ হয় সে। পরে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ নগদ টাকা সহ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত তুহিন ও আশিক স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা শিকার করেন। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে, অফিস কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) পদে কর্মরত আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং আউটসোর্সিং পিয়ন আশিক দীর্ঘদিন ধরেই জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে জড়িত ছিলেন। তদন্তে ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ, জাল সইযুক্ত বিল, এবং পিয়ন আশিকের স্বীকারোক্তি মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিশ্চিত হয়।
শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকতা মো: জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেওয়া হলে ৮১বিল বাউন্স হয়। তারা জানায় ৮১টি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। এমন তথ্য জানানোর পর অমরা তাদের কাছে থেকে পরিশোধকৃত বিল ভাওচার নেই। সেগুলোতে স্বাক্ষর জালের বিয়টি ধরা পরে। পরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে এনএসআই তদন্ত করে তুহিন ও আশিকের সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে তুহিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফতাফ হোসেন জানায়, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে তুহিন ও আশিক স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা শিকার করেন। আমরা নগদ টাকা সহ গ্রেফতারকৃতদের আদালতে শোপর্দের ব্যবস্থা নিচ্ছি। যে পরবর্তীতে তদন্ত দুদক।
শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. ফারজানা ইয়াছমিন বলেন, গ্রেফতারকৃত তুহিন ও আশিকের বিরুদ্ধে আশিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমরা সেটাই করেছি।