• নরসিংদী
  • বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

স্বামীর সাথে থাকেন ঢাকায়, স্কুলে না এসে ও বেতন নিচ্ছেন নিয়মিত! 


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:১৭ পিএম
স্বামীর সাথে থাকেন ঢাকায়, স্কুলে না এসে ও বেতন নিচ্ছেন নিয়মিত! 
স্কুল ভবন

নাসিম আজাদ, পলাশ: নরসিংদীর পলাশে গত দু'বছর ধরে স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একজন স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের রামপুরা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তামান্না আক্তার মনিকে সরজমিনে গিয়ে স্কুলে পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাছরিন সুলতানার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তামান্না আক্তার মনি স্কুলে আসে নাই সে ছুটিতে আছে। আগেও ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন স্কুলে আসেন নাই এবারও ছুটি নিয়ে স্কুলে আসেন নাই। কারন হিসেবে জানতে চাইলে তামান্না আক্তার মনি জানান, ছোট দুইটি সন্তান আছে বিপদে পড়ে ২ বছর যাবত স্কুলে এসে ক্লাস নিতে পারছেনা। সে স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকেন। তার স্বামী ঢাকায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনে চাকরি করে।

আগে তামান্নার স্বামী পলাশ ইউরিয়া সারকার খানায় চাকরি করতেন। পরবর্তীতে তিনি বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যায় বিধায় তাকে ঢাকা থাকতে হয়। বার বার ছুটি নিচ্ছেন, করোনা কালীন সময়ে স্কুলের লেখা পড়ার বহু ঘাটতি হয়েছে তাই এত ছুটি কাঙ্খিত না। ছুটির দরখাস্তর সাথে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের মেডিকেলের ছুটির কাগজ পাওয়া যায়, যা গ্রহণ যোগ্য নয়। কিন্তু মেডিকেল ছুটির এসব কাগজে ভর্তির তারিখ এবং ছাড়পত্রে কোন তারিখ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কয়েক বারের ছুটির দরখাস্তের সাথে মেডিকেল ছুটির কাগজ পাওয়া যায়, যাহা মেডিকেল ছুটির জন্য বার বার গ্রহণ যোগ্য নয়।

 সহকারী শিক্ষিকা মাহিনুর সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ বছর আমি ১০ দিন ছুটি নিয়েছি। সহকারী শিক্ষিকা নাজমা আক্তার জানান তিনি ৮ দিন ছুটি নিয়েছে। অথচ আমান্না আক্তার মনি দিনের পর দিন ছুটি কাটাচ্ছেন এবং বেতনও নিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষিকা আরও বলেন, আমি ছুটি দিতে চাইনা সে ছুটি নিয়ে নেয়। এলাকা বাসী জানান, তামান্না আক্তার মনি দীর্ঘ ২ বছর যাবত স্কুলে নিয়মিত আসেনা, মাঝে মধ্যে আসেন। 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্কুল কমিটির সভাপতি স্বর্ণা আক্তার জানান, ঐ শিক্ষিকার সাথে ধাপে ধাপে লোকজন আছে বিধায় আমি কিছুই করতে পারছিনা। রশিদুল ইসলাম বলেন, হয়তো ঐ শিক্ষিকা বদলী হয়ে চলে যাক নতুবা নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করুক। না হলে এতে ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকার স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। আমরা সাবাইকে জানিয়েছি কোন ফল পাইনি।

শিক্ষিকা তামান্না আক্তার মনির সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে,  'তিনি বলেন আমার ছোট ছোট দুইটি সন্তান রাখবে কে? আমার সন্তানদেরকে লালন পালন করতে হয়। তাদেরকে দেখার কেউ নাই, আমিও মাঝে মাঝে অসুস্থ থাকি। তিনি এখন ছুটিতে আছেন আবারো ছুটি নিবেন তাই নিয়মিত ক্লাস করতে পারবে না।

এলাকাবাসী জানান তামান্না আক্তার মনির স্বামী আগে পলাশে চাকরি করতেন বিধায় নিয়মিত ক্লাস নিতে পারতেন এখন তার স্বামী ঢাকায় থাকেন বিধায় তারও ঢাকায় থাকতে হচ্ছে। অসুস্থ্যতা একটি উসিলা মাত্র, বেতন তো ঠিকই পাচ্ছেন তার সমস্যা কোথায়? 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান,ম্যানেজ করে চলছে, স্কুলে আসেনা। আমিও এই স্কুলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।  কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। 

এব্যাপারে জানতে পলাশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বারবার গিয়েও কর্মকর্তাদের অনুপুস্থিত থাকার কারণে কারো স্বাক্ষাত পাওয়া যায়নি।

 

শিক্ষা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ