স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে গত কয়েক দিন ধরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। কমছে তাপমাত্রা। দিনের বেলায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকলেও বিকাল থেকে কমতে শুরু করে। বিশেষ করে শহরের বাইরে হাওয়া ও গ্রামের আবহাওয়ায় পরিবর্তন দেখা যায়।
সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। তবে সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। রাতে তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে পড়তে থাকে ঘন কুয়াশাও। পাশাপাশি হিমেল হাওয়া শীতের তীব্র তাকে আরও বাড়িয়েও দিচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এদিকে ঘন কুয়াশায় কাজের জন্য ঘর থেকে বের হতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের ওই সকল মানুষগুলোকে।
এদিকে পৌষের আগমনের সাথে সাথে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পুরো নরসিংদী জেলা। শীত থেকে রক্ষায় মোটা জামা-কাপড় পরে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কর্মজীবীরা। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে এদিন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েক দিনে রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে বলে আশা করছে এলাকাবাসী।
রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক খোরশেদ আলম বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে একটু বেশি শীত আর কুয়াশা পড়ছে। এই শীতের মধ্যে গাড়ি নিয়ে বের হতে কষ্টও হচ্ছে। কিন্তু গরম বা শীত আমাদেরতো গাড়ি চালাতেই হবে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য এই শীতটা একটু কষ্টকর হয়। সবাইতো আর আমরা মোটা জামা-কাপড় কিনতে পারি না।
জানা যায়, শহরে এখনো তেমন ঠাণ্ডা না পড়লেও গ্রাম এলাকায় শীত পড়েছে বেশি। বিশেষ করে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত এলাকাগুলো মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও ফেনী জেলার পাহাড়ি ও সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা এবং পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোতে খুব বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় প্রায় প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। ফলে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ডিসেম্বরের শেষ দিকে তাপমাত্রা আরও কমে আসবে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ভিড় বাড়ছে, গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছে। তবে তুলনামূলকভাবে বিপণিবিতানগুলোতে চেয়ে ফুটপাতের দোকানগুলোতে অনেক ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। যতই শীতের তীব্রতা বাড়ছে ফুটপাতের দোকানগুলো বিক্রিও বাড়ছে।
মূলত নিম্ন আয়ের মানুষেরাই ফুটপাতে দোকানগুলোর ক্রেতা। তবে কিছু সংখ্যক মধ্যম আয়ের মানুষদেরকে ফুটপাতের এই দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায়।
শীতের কাপড় ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন বছর করোনার কারণে আমাদের ব্যবসা মন্দা গেছে। এ বছর শীতের শুরু থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা যত বাড়ছে, বিক্রিও তত বাড়ছে।
ভোরের দিকে ঘন কুয়াশার সাথে সাথে হিমেল হওয়া যেন শীতের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করে, কুয়াশা ও শিশির কণা শীতকে আরো স্থায়ী করে রাখছে। শীত বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এতে করে তারা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে গৃহপালিত পশু লালন পালনে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শীত।
ফলে হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।