নিজস্ব প্রতিনিধি
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ বিল্লালের হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ মো. বিল্লাল হোসেন, হাসপাতালে সদ্য যোগদানকৃত ১১ জন নার্সের মুভ ইন করার নামে জনপ্রতি ৩শ টাকা করে নিয়ে মুভ ইন করেন এবং পরবর্তীতে বিষয়টি প্রকাশ হলে পরিসংখ্যানবিদ নার্সদের টাকা ফেরত দেন ।
মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ/ ২১ উদযাপনে উপজেলার ৩৮ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য প্রতিটির জন্য বরাদ্দকৃত ১৪৫০ টাকা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে। কোভিট-১৯ টিকার মেসেজ প্রদানে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে টাকা নিয়ে মেসেজ প্রদান, করোনাকালীন সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ারদের সম্মানী ভাতা প্রদান না করা, করোনার টিকা দেওয়া হয় এক কোম্পানির আর সনদের মেসেজ দেওয়া হয় অন্য কোম্পানির।
এতে টিকা গ্রহণকারীগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। টিকা নিয়েও সনদের জন্য মেসেজ পান না। এর জন্য হাসপাতালের বিল্লালের নিকট দিনের পর দিন ধর্না দিতে হয়।কোভিট- ১৯ এর টিকার মেসেজ প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত কাজ বিল্লালই করে থাকেন। এ সুযোগে সে এ সকল অনিয়ম করে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিসংখ্যানবিদ বিল্লালের রয়েছে শিবপুর হাসপাতালের আশেপাশে একাধিক ও নরসিংদীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ফলে হাসপাতালের কোন রোগীকে কোন পরীক্ষা দিলেই দালাল এসে হাজির হয়ে যায় হাসপাতালের বাইরের বিল্লালের মালিকানাধীন প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করার জন্য। রোগীরা নিরুপায় হয়ে বাইরে থেকেই তাদের রোগের পরীক্ষা করতে হয়। এছাড়া বিল্লালের বিরুদ্ধে একই হাসপাতালের জনৈক এক নার্সের সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এ সকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিসংখ্যানবিদ মো. বিল্লাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে করোনার টিকা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালের ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের চারজন কর্মচারীকেও বদলী করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানবিদ মো. বিল্লাল হোসেনকে মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি কোন জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা আহমেদ পরিসংখ্যানবিদ বিল্লালের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের চারজন কর্মচারীকে বদলী করা হয়েছে। এ সকল অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান অবগত আছেন।
শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খান জানান, হাসপাতালের বিল্লালের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য।
শিবপুর আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন বলেন , 'শিবপুর সরকারি হাসপাতালে কর্মরত যাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যাবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'