নিজস্ব প্রতিনিধি : দেশে রিকশা চালিয়ে সংসার চলছিল না হাসিম উদ্দিনের (৪৪)। স্বপ্ন বিদেশ গিয়ে টাকা উপার্জন করে সংসারের অভাব অনটন দূর করবেন। সেই স্বপ্ন পুরণ করতে ধার করে, বাড়ির সহায় সম্বল বিক্রি করে, সংসারের স্ত্রী, ছেলে মেয়ের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য চলে গেলেন বিদেশ।
২০২৫ সনের ২২ জুন সুখের স্বপ্ন পুরনের জন্য সৌদি আরব চলে যান। আল তেজারত কোম্পানির অধীনে সৌদি আরবের জেদ্দার সাবিহায় সিটি ক্লিনারের কাজ করছেন। বাড়ির সাথে যোগাযোগ রেখে দিন মাস ভালই অতিবাহিত হচ্ছিল। ২৩ নভেম্বর শনিবার রাতে বাড়িতে স্ত্রী, সন্তানদের সাথে কথা হয়।
প্রতিদিনের মত ২৪ নভেম্বর রবিবার সকালে নির্ধারিত কাজে যোগদান করেন। দুর্ভাগ্যবশত সৌদি আরবের সময়ে সকাল দশটায় পিছন থেকে পুলিশের একটি গুলি তার পিঠে লেগে পেট দিয়ে বের হয়। হাসিম উদ্দিন মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পরেন।তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সেই দেশের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন।হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিয়েও বাঁচাতে পারেননি।
ওই দিনই হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।তার সাথীরা মৃত্যুর খবর বাড়িতে জানিয়ে দেন।নিহত হাসিম উদ্দিন শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের গড়বাড়ী গ্রামের মৃত লেহাজ উদ্দিনের ছেলে।তাঁর এক স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে রয়েছে। হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী তাছলিমা বেগম জানান, ২৪ নভেম্বর রবিবার বাংলাদেশ সময়ে ১ টায় জানতে পারি সৌদি আরবের সময়ে সকাল দশটায় তার স্বামী পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং হাসপাতালে মারা গেছেন।
স্বামীর সাথে থাকা তার সংগী আলতাফ হোসেন তাদেরকে রবিবার বিকেল ১টায় মোবাইল ফোনে জানান, তার স্বামী কাজ করছিল।এমন সময় অদূরেই পুলিশ একটি চোরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।গুলিটি ভুলবশত তার স্বামীর পিঠে গিয়ে গুলিবিদ্ব হয়। পরে তারা খবর পেয়ে ও তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সে ওই দিনই মারা যায়।
নিহত হাসিম উদ্দিনের মেয়ে স্মৃতি আক্তার জানান, তার পিতার মরদেহ দেশে আনার জন্য, নরসিংদী জেলা জনশক্তি অফিস ও সৌদি আরব কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করছেন।