স্টাফ রিপোর্ট : বাড়ির পশ্চিম পাশে গাবগাছ। গাব গাছে কয়েকটি বাঁশ পড়ে আছে। বাঁশগুলি কাটার জন্য সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে গাবগাছে উঠে মো. ফোরকান মিয়া। এরই মধ্যে গাবগাছসহ আশপাশের গাছ বাড়িঘর ঝাঁকুনি দিতে থাকে। ফোরকান গাছ থেকে মাটিতে পড়ে আহত হয়ে পড়ে থাকে। নিজ ইচ্ছায় উঠে বাড়িতে আশার সামর্থ্য সে হারিয়ে ফেলে। তাঁর বাড়ির লোকজন বুঝতে পেড়েছে ভুমিকম্প হয়েছে।
ছোটাছুটি শুরু করে বাড়ির লোকজন। ফোরকানকে না পেয়ে বাড়ির লোকজন
সকাল এগারোটায় বাড়ির পশ্চিম পাশে গাবগাছের নিচে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার করতে থাকে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা জটিল দেখে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফোরকানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। এম্বুলেন্সে করে ঢাকা নেওয়ার পথে সে মারা যায়। কথাগুলো বলতে গিয়ে চোখের পানি অঝোরে ফেলে ফোরকান মিয়ার স্ত্রী মোসা. রাফেজা আক্তার। রাফেজা আক্তার মোর্চা গিয়ে আর কিছু বলতে পারছেননা। ফোরকানের মা মরিয়ম বেগম (৯০) বাকরুদ্ধ, তিনি কোন কথাই বলতে পারছেন না।
মো. ফোরকান মিয়া (৪২) শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আজকিতলা পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে। শনিবার ২২ নভেম্বর বিকেল পাঁচটায় নিহত ফোরকানদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় ফোরকানের স্ত্রী, মাতা ও মেয়ের সাথে। নিহত ফোরকান মিয়ার মেয়ে ফাবিয়া আক্তার (১৭) জানান, পিতাকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ, কথা বলার সামর্থ্য নেই। তার পরও বলছি,আব্বার জানাজা হয়েছে,২১ নভেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায়। আমরা এক ভাই, এক বোন। আমি বিবাহিত। ভাই অতিবাহিত। ভাই মো. রিফাত মিয়া (২২) লেখাপড়া বেশি করতে পারেনি। আমিও করতে পারিনি। অভাবের সংসার। ভাই বিদেশ গিয়ে থাকতে পারেনি। সে বর্তমানে শিবপুর উপজেলার চৈতন্যা আব্দুল্লাহ ফিডে অল্প বেতনে চাকরি করেন। আব্বা কৃষি কাজ করতেন।এভাবেই আমাদের সংসারটা অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। এর মধ্যে ভূমিকম্পে গত ২১ নভেম্বর শুক্রবার আব্বা মারা যান। আমরা এখন অসহায়। গতকাল রাতে শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. ফারজানা ইয়াসমিন ও শিবপুর মডেল থানা পুলিশ বাড়িতে এসেছিল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. ফারজানা ইয়াসমিন আমাদের ২০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে যান।
শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. ফারজানা ইয়াসমিন জানান, 'আমি গতকাল রাত আটটায় তাদের বাড়িতে গিয়েছি। তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। ডিসি স্যার ২৫ হাজার টাকা দিবেন। হাতে পেলে পৌঁছে দিব। এছাড়া শিবপুর উপজেলায় অন্য কোন সমস্যা হয়নি।'