
স্টাফ রিপোর্ট: নবগঠিত নরসিংদী জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে নিস্ক্রিয় ও আওয়ামী দোসরদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে পদ বিক্রি করার মতো গুরুতর অভিযোগ সম্বলিত পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এসব পোস্টে তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এর প্রতিকার দাবী করছেন। গত ২৬ শে এপ্রিল নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন ও সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহি নির্বাচিত হন। গত ৫ ই জুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেন। মাধবদী পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন মানিকের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত মফিজুল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পদ। তাছাড়া রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট না থাকার পরও মাহবুবুর রহমান মনিরকে জেলা বিএনপির সদস্য করা হয়েছে।
গত ২১ শে জুন নতুন কমিটির পরিচিত সভা নরসিংদী শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী সন্ত্রাসের গড ফাদার মেয়র কামরুলের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত রাশেদুল হাসান রিন্টুকে দেওয়া হয়েছে কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ। বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে কখনো অংশ না নিয়ে সহ-ধর্ম বিষয়ক পদ পেয়েছেন দীপঙ্কর চন্দ্র সাহা। এছাড়া সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের বডিগার্ড হিসাবে পরিচিত মাহফুজুর রহমানকে জেলা কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে কেন্দ্রীয় যুবদল কর্তৃক বহিস্কৃত মাহমুদ হাসান চৌধুরী সুমনকে জেলা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক পদ দেওয়য় হয়েছে। একজন বহিস্কৃত নেতাকে পদ দেওয়ার ঘটনায় নরসিংদী শহরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ১৭ বছর ধরে রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি খবিরুল ইসলাম বাবুলকে দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতির পদ।
তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষোভের সাথে বলেন- খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানা নরসিংদী জেলা বিএনপিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে জেল জুলমের শিকার হয়েও অনেক নেতাকর্মী জেলা কমিটিতে স্থান পায় নি। অন্যদিকে ভাবির অনুকম্পা পেয়ে অনেক অপরিচিত লোকজন জেলা কমিটির পদ পেয়েছেন। বিএনপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জেলা কমিটি গঠনে চরম দূর্নীতি ও পদ বানিজ্যের ঘটনা ঘটেছে। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে চাটুকার, সুবিধাবাদী, নিষ্ক্রিয় ও আওয়ামী দোসরদের নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়েছে। তৃনমুল নেতাকর্মীরা কমিটি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ। তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কমিটি গঠনে বিভিন্ন অনিয়ম ও পদ বাণিজ্য বিষয়ে জানার জন্য নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।