• নরসিংদী
  • মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৭ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ০৭ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

শিবপুরে প্রেমিকার ১৯ দিন পর প্রেমিকের আত্মহত্যা


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৪৬ পিএম
শিবপুরে প্রেমিকার ১৯ দিন পর প্রেমিকের আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে ১৯ দিন পরে প্রেমিক সিফাত (১৯) ফেসবুক‌ স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।  

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। সে শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

মৃত্যুর আগে এক দীর্ঘ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সিফাত লেখেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি।

কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন এক সঙ্গে থাকতে পারি।

আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক। আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধু ও দায়ী না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নেই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না বেঁচে থেকে আর কি হবে যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।

তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এ কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করলো। এক প্রকার তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করলো। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি। আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে ওদের কোনো সাজা হবে না। আর অন্য দিকে আমার তানহাও শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবার ও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল‍্যাকমেলের শিকার না হয়। আমার শেষ একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম বাস্তবে তা হলো না, তাই আমার মৃত্যুর পরে তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়।

আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু একটা কারণে হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারিনি। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিলো ভালো থাকুক আঙ্গুর আর তার পরিবার।

নিহতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দুইটার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)। এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কু-প্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কু-প্রস্তাব রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। মারামারি বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে।  

লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ