• নরসিংদী
  • শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ;   ২১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
website logo

অনিয়ম, নরসিংদীতে মিড ডে মিল চালুর ৪ দিনেই বন্ধ!


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০১:০৭ এএম
অনিয়ম, নরসিংদীতে মিড ডে মিল চালুর ৪ দিনেই বন্ধ!
ছবি সংগৃহীত

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর পুষ্টি নিশ্চিত ও ঝরে পড়ার হার কমাতে ‘মিড ডে মিল’ বা স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করে সরকার। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে কার্যক্রম শুরুর মাত্র চতুর্থ দিনেই নরসিংদীতে এই কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গেছে।  বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় এ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) থেকে দেশের ১৬৫টি উপজেলায় পূর্ণাঙ্গভাবে ‘স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথম তিন দিন নরসিংদীর বিদ্যালয়গুলোতে খাবার সরবরাহ করা হলেও হঠাৎই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে খাবার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে নির্ধারিত পুষ্টিকর খাদ্য থেকে।

নরসিংদী প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৭০টি। এসব বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে ১ লাখ ৫২ হাজার ২৩৬ জন ছাত্র-ছাত্রী।

সরকারের প্রত্যাশা ছিল—মিড ডে মিল চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ঘাটতি দূর হবে, ক্ষুধার তাড়না কমবে, শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ বাড়বে এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হারও কমে আসবে।

কিন্তু কার্যক্রমের শুরুতেই খাবার সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে।

‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’ অনুযায়ী সপ্তাহে পাঁচ দিন শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতিদিনের জন্য নির্ধারিত খাদ্য তালিকাটি হলো

রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার: ১২০ গ্রাম ওজনে বনরুটি ও সেদ্ধ ডিম (৬০ গ্রাম), সোমবার: বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ (২০০মিলি) এবং বুধবার: ফরটিফাইড বিস্কুট (৮০ গ্রাম) + মৌসুমি ফল বা কলা (১০০ গ্রাম)।

কিন্তু আওলাদ হোসেন মোল্লার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব খাবার নিয়মিত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় পুরো কর্মসূচিই স্থগিত হয়ে যায়।

জেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দুই শিফটে স্কুল চলে। প্রথম শিফট ছুটি হওয়ার এক ঘন্টা আগে শিশুদের এই টিফিন স্কুলে পৌছে দেওয়ার  কথা থাকলেও   অধিকাংশ স্কুলে সেই টিফিন পৌঁছায় বেলা ২টার পরে। সেই ক্ষেত্রে টিফিনের সাথে দেওয়ার সিদ্ধ ডিম যার গুণগত মান দুই ঘন্টা পর্যন্ত বলবৎ থাকে। ওই ডিম সহ টিফিন পৌঁছানো হয় কয়েক ঘন্টা পরে।  

এ ব্যাপারে বেলাব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলেখা শারমিন ওই সেদ্ধ ডিমকে পচা ডিম হিসাবে আখ্যায়িত করে শিশু-কিশোরদের সেগুলো না খাওয়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল (বুধবার) শিবপুরে যে রুটি সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে তাতে মেয়াদকাল দেওয়া ছিল ২০৫০ সাল পর্যন্ত। বিভিন্ন স্কুল গুলো এই রুটি সাপ্লাই দেওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। 

তাছাড়া সরকারি যে তালিকা রয়েছে কোন দিন কোন খাবার দেওয়া হবে কিন্তু তালিকা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে ওই নির্দিষ্ট খাবার না দিয়ে অন্যদিনের তালিকায় থাকা খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।  রায়পুরা ১০ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হাসনাহেনা বলেন, আমার বিদ্যালয় ২১৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন এরমধ্যে আজ (বুধবার) উপস্থিত আছে ১৮০ জন আমি শুধুমাত্র ১৮০ টি কলা হাতে পেয়েছি।   

অভিভাবকদের দাবি—এ ধরনের একটি বৃহৎ প্রকল্প শুরু করার আগে যথাযথ প্রস্তুতি ও কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করা উচিত ছিল।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে খাবার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা আন্তরিক রয়েছেন। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার চেষ্টা চলছে। 

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আওলাদ হোসেন মোল্লাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিও তাকে  পাওয়া যায়নি 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে তার কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।  তবে মোহাম্মদ ইমদাদুল হক নামে সহকারি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে কার্যালয়ে পাওয়া গেল তিনি ক্যামেরার সামনে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
 

শিক্ষা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ