
স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদী সদর উপজেলার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও শহিদুল্লাহ অল্প দিনে গড়েছেন অঢেল সম্পদ, বনে গেছেন টাকার কুমিরের। নরসিংদী সদর উপজেলায় অফিস সহকারী হিসেবে চাকুরিরত অবস্থায়ই হয়েছেন বাড়ি, গাড়িসহ অত্যাধুনিক শপিংমলের দোকান মালিক। এছাড়াও নামে-বেনামে ক্রয় করেছেন অঢেল ধন-সম্পদ।
শহিদুল্লাহ নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী (নিম্ন মান সহকারি) পদে কর্মরত আছেন বলে জানা যায়। কীভাবে হলেন এত সম্পদের মালিক? কোথায় তার উৎস? এমনটাই প্রশ্ন স্থানীয়দের।
জানা যায়, শহিদুল্লাহ নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সদর উপজেলায় বদলী করা হয় তাকে। এরপর তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ব্যক্তিগত সহকারি দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। সদর উপজেলায় বদলী হয়ে আসার পর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অল্পদিনে বনে গেছেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ।
ইউএনও এর সহকারির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন অনিময় ও দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। এমন একাধিক অভিযোগে ৩/৪ বদলীর আদেশ হলেও তিনি টাকা দিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলকে ম্যানেজ করে স্বপদে বহাল থাকেন বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহীদুল্লাহর গ্রামের বাড়ি রায়পুরাও উপজেলায় হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেনি কেউ। তাছাড়া তার বড় ভাই পুলিশের এএসপি পদে কর্মরত থাকায় তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে পুলিশি ঝামেলা পোহাতে হতে পারে এমনটা ভেবেই অনেকেই নিরব থেকেছে। তার অপর ভাই আমেরিকা প্রবাসী।
সহকর্মীদের এই নীরবতায় শহীদুল্লাহ বনে গেছেন অর্থবিত্তের মালিক। ক্রয় করেছেন নরসিংদীর অত্যাধুনিক শপিংমল ইনডেক্স প্লাজায় দোকান ঘর, শহরের নদীবাংলা গ্রুপের মেঘনা প্লাজায় ফ্ল্যাট, বনলতা টাওয়ারে স্ত্রীর নামে বিলাস বহুল ফ্লাট, ক্রয় করেছেন গাড়ী। শুধু তাই নয় নামে-বেনামে ধন-সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেছেন তৃতীয় শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী।
শহীদুল্লাহর একাধিক সহকর্মী জানায়, ইউএনও এর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনিয়ম দূর্নীতিও ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে কয়েক বছরে বনে গেছেন কোটিপতি। সম্প্রতি ইনডেক্স প্লাজার দোকান সমিতির যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে এই শহীদুল্লাহকে সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এব্যাপারে শহীদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন দূর্নীতির সাথে জড়িত নই। এসব মিথ্যা কথা। আমি তো এদেশের ছেলেই। তাই আমার সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেন। আসলে আমার কি আছে। আমি কোন দূর্নীতির সাথে জড়িত আছি কিনা।